ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্থূলতাসহ বেশ কয়েকটি শারীরিক সমস্যার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদন বাতিল হতে পারে। নতুন নির্দেশনায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এসব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে যদি তারা “পাবলিক চার্জ” বা অর্থনৈতিক বোঝা হয়ে দাঁড়ানোর ঝুঁকিতে থাকেন।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নির্দেশনায় বিদেশি দূতাবাস ও কনস্যুলার কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে— ভিসা আবেদনকারীর বয়স, স্বাস্থ্যগত অবস্থা ও আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি কোনো আবেদনকারীর দীর্ঘমেয়াদি বা ব্যয়বহুল চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তবে তাকে ভিসার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা যেতে পারে।
এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মূলত সংক্রামক রোগ— যেমন যক্ষ্মা বা টিকাদান-সংক্রান্ত ইতিহাস যাচাইয়ের ওপর জোর দেওয়া হতো। তবে নতুন নির্দেশনায় এবার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এমন সব অসংক্রামক রোগ, যেগুলোর চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি বা ব্যয়সাপেক্ষ।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, বিপাকজনিত ব্যাধি, স্নায়বিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা— এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় বছরে শত সহস্র ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজনকেও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে, কারণ এটি অ্যাজমা, স্লিপ অ্যাপনিয়া ও উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের সম্ভাবনা বাড়ায়।
ভিসা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আবেদনকারীর আর্থিক সামর্থ্য যাচাই করার জন্য— অর্থাৎ তারা সরকারি সহায়তা ছাড়াই চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে পারবেন কি না তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ চার্লস হুইলার বলেন, “নতুন নির্দেশনাটি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ফরেন অ্যাফেয়ার্স ম্যানুয়ালের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যেখানে কর্মকর্তাদের কাল্পনিক ঝুঁকির ভিত্তিতে আবেদন প্রত্যাখ্যান না করার নির্দেশনা দেওয়া আছে।”
অন্যদিকে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন আইনজীবী সোফিয়া জেনোভিস মন্তব্য করেছেন, “এই নির্দেশনা কর্মকর্তাদের চিকিৎসাগত প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্বাস্থ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করছে, যা অনেক আবেদনকারীর জন্য অন্যায় হতে পারে।”
.png)
0 মন্তব্যসমূহ